৪১তম বিসিএস অডিট এন্ড একাউন্টস ক্যাডার জনাব এস. এম. খালেদ চৌধুরীর ভাইবা অভিজ্ঞতা

৪১তম বিসিএস অডিট এন্ড একাউন্টস ক্যাডার জনাব এস. এম. খালেদ চৌধুরীর ভাইবা অভিজ্ঞতা
Admin

৪১তম বিসিএস অডিট এন্ড একাউন্টস ক্যাডার জনাব এস. এম. খালেদ চৌধুরীর ভাইবা অভিজ্ঞতা


৪১তম বিসিএস অডিট এন্ড একাউন্টস ক্যাডার জনাব এস. এম. খালেদ চৌধুরীর ভাইবা অভিজ্ঞতা
৪১তম বিসিএস অডিট এন্ড একাউন্টস ক্যাডার জনাব এস. এম. খালেদ চৌধুরীর ভাইবা অভিজ্ঞতা


এস. এম. খালেদ চৌধুরী 
সহকারী মহা হিসাবরক্ষক (সুপারিশপ্রাপ্ত)
বিসিএস অডিট এন্ড একাউন্টস 
৪১তম বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা

ভাইভার ধরন : আমার ভাইভা ইংরেজি এবং বাংলা মিক্সড ছিলো। ইংরেজি ৪০% মতো হবে।
সময় : আনুমানিক ২৩/২৪ মিনিট 
নিজ সাবজেক্ট : আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 
পছন্দক্রমঃ প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস, অডিট, ট্যাক্স......................... 
বোর্ডঃ খলিলুর রহমান স্যার
আমার সিরিয়াল ছিলো ১৪ জনের মধ্যে ৮ম।

বেল দেয়ার পর দরজা ঠেলে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলাম। কাছে গিয়ে সালাম দিলাম। ধন্যবাদ জানিয়ে চেয়ারে বসলাম। চেয়ারম্যান স্যার মাস্ক খুলে রাখতে বললেন।
চেয়ার বসতে বলে চেয়ারম্যান স্যার নিজ থেকে জেলা, ডিপার্টমেন্ট, চয়েজলিস্ট বলছিলো। আমি হ্যাঁ বলছিলাম।
চেয়ারম্যান স্যারঃ Introduce yourself focusing your University
উত্তরঃ উত্তর গুছানো ছিলো, বললাম ৪০/৫০ সেকেন্ড। মনে হলো স্যার আমার ইংরেজি দেখছিলো, স্যার সন্তুষ্ট মনে হলো।
চেয়ারম্যান স্যারঃ মুজিব নগর সরকার গঠন নিয়ে বলুন।
উত্তরঃ কমন প্রশ্ন। আমি ১০ এপ্রিল ১৯৭১ এবং ১৭ এপ্রিল আর স্থান বলে দপ্তরগুলো বলে যাচ্ছিলাম। খুব সম্ভবত তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বললাম(চেষ্টা করছিলাম টু দ্য পয়েন্টে কথা বলতে)
চেয়ারম্যান স্যারঃ থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, Who was the Defence Minister? 
উত্তরঃ তাজউদ্দীন আহমদ বললাম। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ কুর্দি সমস্যা নিয়ে ডিটেইলস বলো।
উত্তরঃ আমি প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ থেকে সংক্ষেপে বলে আসছিলাম। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ মাঝখানে থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো কুর্দিরা কোথায় আছে?
উত্তরঃ আমি সিরিয়া, ইরান, ইরাক, তুরস্ক 
চেয়ারম্যান স্যারঃ আর? 
উত্তরঃ আমি ৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে বললাম আর্মেনিয়া, বলে থামলাম। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ মনে হলো খুব খুশি( আন্তর্জাতিক সম্পর্কে পড়ার কারণে ম্যাপ মোটামুটি বুঝতাম, আর্মেনিয়ার সাথে কুর্দিস্তানের অল্প বর্ডার আছে)। স্যার আবার প্রশ্ন করলেন, কুর্দিরা কোথায় ভালো আছে?
উত্তরঃ বললাম স্যার, ইরাকী কুর্দিস্তান স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে, ঐখানে মোটামুটি ভালো আছে। (আমার মাথায় ছিলো স্যার এই উত্তর চাচ্ছিলো, তখন ইরানে কুর্দি মাশা আমিনী হত্যাকাণ্ড নিয়ে উত্তাল)। স্যার মনে হলো, উত্তর এটাই আশা করেছেন।
চেয়ারম্যান স্যারঃ সোহরাওয়ার্দী নিয়ে বলো।
উত্তরঃ আমি বললাম, উনি কী কী দায়িত্ব পালন করেছেন, ভারত এবং পাকিস্তানে উনার অবদান, বঙ্গবন্ধুর সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ উনি কোথাকার মেয়র ছিলেন?
উত্তরঃ কলকাতার মেয়ার ছিলেন বললাম।
চেয়ারম্যান স্যারঃ উনি কোথাকার নাগরিক ছিলেন?
উত্তরঃ বললাম, উনি অবিভক্ত ভারতের নাগরিক ছিলেন, পরে দেশভাগের পর পাকিস্তানে ফিরে আসেন।
চেয়ারম্যান স্যারঃ উনি ভারতের কোন অঞ্চলের নাগরিক ছিলেন?
উত্তরঃ স্যার, উনি পশ্চিম বঙ্গের নাগরিক ছিলেন, স্যার আরো নিদিষ্ট উত্তর চাচ্ছিলেন, তখন আমি কনফিউজড ছিলাম চব্বিশ পরগণা না মালদহ নিয়ে। তাই দুঃখিত বললাম। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ ওনার বাবা কে ছিলেন?
উত্তরঃ এই প্রশ্ন আউট অব বক্স ছিলো আমার জন্য। দুঃখিত বললাম, বললাম স্যার আমার জানা উচিত ছিলো।আমি জেনে নিবো।
চেয়ারম্যান স্যারঃ হ্যাঁ জেনে নিবেন, জাতীয় নেতাতো আমাদের, জানা উচিত। আমি নিশ্চয়ই বললাম। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ গান শুনি কিনা? হ্যাঁ বলাতে, ক্লাসিকাল না আধুনিক জিজ্ঞেস করলো।
উত্তরঃ আমি ক্লাসিকাল বললাম। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ কার গান শুনা হয়?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ বলে, বললাম এস ডি বর্মন।
চেয়ারম্যান স্যারঃ এস ডি বর্মনের পুরো নাম কী?
উত্তরঃ বললাম, গান বলতে বললেন, আমি 'তুমি এসেছিলে পরশু'.......... বললাম, স্যার আরো জানতে চাইলেন। তখন ভাইরাল 'শুনোগো দখিনা হাওয়া' আমার প্রথম লাইন মাথায় আসছিলো না, বারবার 'প্রেম করেছি আমি' এইটুকু আসছিলো, পরে এইটুকু বলাতে স্যার হেসে দিলেন।
চেয়ারম্যান স্যারঃ এস ডি বর্মনের একটা ছেলেও গান করে, বিখ্যাত। নাম জানো?
উত্তরঃ আমি আর ডি বর্মন বললাম, স্যার পুরো নাম জানতে চাইলেন। ভুলে যাওয়াতে দুঃখিত বললাম। স্যার উনার গান জিজ্ঞেস করলে আমি দুঃখিত মনে পরছে না বললাম। সাথে বললাম, স্যার আমার জানা উচিত ছিলো।
চেয়ারম্যান স্যারঃ খালেদ, সব জানার দরকার নেই। (স্যার বুঝিয়ে দিলেন, এই প্রশ্ন পারা না পারা কিছু আসে যায় না বৎস🤣)
চেয়ারম্যান স্যারঃ ক্যাডারগুলো কী কী আবার বললেন। পরে বললো, আচ্ছা ইদানীং একটা গান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেটার শুরুটা অকথ্য ভাষায়(এই গান নিয়ে বেশ কিছু কথা বললো, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ গান চলতে পারে না এসব) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন শুনেছি কিনা?
উত্তরঃ আমি একটু সময় নিয়ে বললাম, স্যার ইদানীং আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু কম থাকাতে শুনা হয়নি।( গানটি আমি বলতে চাইনি, গানটি হচ্ছে "**** বাচ্চা ফুটফুটে সুন্দর........")
চেয়ারম্যান স্যারঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছিলে না, ভাইভার প্রিপারেশন নিচ্ছিলা?
উত্তরঃ আমি বললাম, স্যার অনেকটা তাই।
চেয়ারম্যান স্যারঃ কী কী প্রিপারেশন নিয়েছো?
উত্তরঃ বললাম, বঙ্গবন্ধুর বইগুলোর কথাও বলাতে, স্যার জিজ্ঞেস করলেন, কোন বইটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে জিজ্ঞেস করলেন, বললাম। 
চেয়ারম্যান স্যারঃ মিডল ইস্ট কী? কেনো মিডল ইস্ট বলা হয়?
উত্তরঃ মিডল ইস্টের জিওগ্রাফি বললাম, তবে কেনো মিডল ইস্টকে মিডল ইস্ট নামকরণ করা হয়, তা আমার ক্লিয়ার আইডিয়া ছিলো না, তাই লাস্টে না পেচিয়ে দুঃখিত, জানা নেই বললাম। 

এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ What's the difference between International Relations vs International Marketing as a subject of BBA
উত্তরঃ আমি বললাম, স্যার উত্তর নিলেন মনে হলো।
এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ বাংলাদেশের ফরেন পলিসি কী, বর্তমান কী অবস্থা? 
উত্তরঃ গুছিয়ে বললাম, সাথে ব্যালেন্সিং এর উপর গুরুত্ব দিলাম।
এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ ব্যালেন্সিং কী? উচিত কিনা বা কী হচ্ছে জানতে চাইলেন। 
উত্তরঃ বললাম ডিটেইলস  
 এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ জন স্বাস্থ্য, জন সেবা, জন কল্যাণের মধ্যে সম্পর্ক কী?
উত্তরঃ মোটামুটি গুছিয়ে বললাম, স্যার উত্তর নিলো মনে হলো।
এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ এডমিনে আসলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পড়াশোনা কীভাবে কাজে লাগাবা?
উত্তরঃ গুছানো ছিলো আগে থেকেই, বললাম।
এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ বার্থ ডেইট?
উত্তরঃ বলাতে, স্যার হিসেব করে বললেন, জাস্ট ২৫ বছর? আমি, হ্যাঁ বললাম 
এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ হলে থাকা হয় কিনা? কি সমস্যা হলে?
উত্তরঃ বললাম, আবাসন সমস্যা, সমাধান কী জিজ্ঞেস করাতে, বললাম। 
এক্সটার্নাল ১ স্যারঃ বাসায় কে কে আছে?
উত্তরঃ বললাম 

এক্সটার্নাল ২ স্যারঃ এডমিনে আসলে 4IR বাস্তবায়নে কী করবা?
উত্তরঃ বললাম, গুছানো ছিলো আগে থেকে।
এক্সটার্নাল ২ স্যারঃ জিও পলিটিক্স কি? 
উত্তরঃ বললাম(নিজের মতো করে, ডিপার্টমেন্টের পড়া)
এক্সটার্নাল ২ স্যারঃ ভারত এবং চীনের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব কী? 
উত্তরঃ ভারত ও চীনের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করলাম আলাদা আলাদা করে, মোটামুটি ডিটেইলস বলেছিলাম, স্যার উত্তর নিলেন।
এক্সটার্নাল ২ স্যারঃ এখন কি করা হয়?
উত্তরঃ বললাম।( চেয়ারম্যান স্যার ইশারা করছিলেন শেষ করতে, তাই স্যার শেষ করলেন)

চেয়ারম্যান স্যারঃ মনে করো আমরা মিয়ানমার চিনি না, আমাদের একটু পরিচয় করিয়ে দাও মিয়ানমারের অবস্থান, রাজনীতি, ইতিহাস সব।
উত্তরঃ আমি অনুমতি নিলাম ডিটেইলস বলার জন্য, স্যার বললেন বলো। আমি জিওগ্রাফিকাল লোকেশন বলে, ১৯৪৮ এর স্বাধীনতা, ১৯৬২ তে জেনারেল নে উইনের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ পর্যন্ত বলতেই স্যার থামিয়ে দিলেন।
চেয়ারম্যান স্যারঃ ঠিক আছে আসো বলে, ডকুমেন্টস নিতে বললেন এক্সটার্নাল ২ স্যারের কাছ থেকে। 
নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে, সালাম করে বের হয়ে আসলাম। 

আমি একটু দ্রুত কথা বলি তাই প্রশ্ন অনেক বেশি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিলো, তবে পুরো ভাইভাতে আমি ভালোই কনফিডেন্স নিয়ে ফ্লুয়েন্টলি উত্তর করেছিলাম। না পারলে না প্যাঁচিয়ে বিনয়ের সাথে দুঃখিত বলেছি কয়েকবার। 
এই হলে আমার জীবনের প্রথম চাকুরীর ভাইভার অভিজ্ঞতা। আমি স্যারের প্রথম দিনের বোর্ডে ভাইভা দিয়েছিলাম।